সফলতার সাতকাহন

জীবন যে কত রহস্যময় তা বোঝার উপায় কি কারো অাছে। সময়ের সাথে সাথে রহস্যের বহু মুখ উম্মোচন হয়। উম্মোচন হয় নানা সমস্যা ও অনাকাঙ্ক্ষিত জটিলতার দরজা। তবুও, সময় নামক পরিমাপকের বিষয়টা চলতেই থাকে, এগুতেই থাকে উর্ধতম সংখ্যায়। কখনও সফলতা কখনও ব্যার্থতা, এই দুটো বস্তুই তোমার প্রতিটি সময়ের সফলতার-ব্যার্থতার পরিমাপক।

কিন্তু, তোমার এই সময়টায় সর্বোচ্চ পারদর্শীতা প্রদর্শন করার জন্য যেটা প্রয়োজন যেটা হলো সক্ষমতা (Stability)। শুনতে অবাক লাগলেও এটাই বাস্তব যে, সময়ের জন্য সর্বোচ্চ উপযোগী হওয়ার জন্য সক্ষমতা অর্জনের অন্যথায় কিছুই হতে পারে না।

তাহলে, জানা যাক কি এই সক্ষমতা যার মাধ্যমে তুমি সময়ের জন্য (perfect) যথাপ্রযুক্ত হতে পারো। সক্ষমতা হচ্ছে, নিজেকে যে কোন সিচুয়েশনের জন্য তৈরী রাখা, অাগাম প্রস্ততি রাখা।নিজের মধ্যে একটা সিরিয়াসনেস ক্রিয়েট করে নিজের কাজের দিকে ধাবিত করাই হলো সক্ষমতা।অলস,কুড়েমি,অধৈর্য,অযোক্তিতকতা দুয়ার ভেঙ্গে নিজেকে পরিশ্রমী,ধৈর্যশীল, যোক্তিক ও বুদ্বিমত্ত্বার সাথে পথচলাই সক্ষমতা। উদাহারন হিসাবে বলা যায়, তুমি যদি মনে করো “টেন মিনিট স্কুলে” এই অার্টিকেলটি টা পড়ছো শুধুই পড়ার জন্য বা জানার জন্য তাহলে তোমায় বলবো তুমি এখনও সাধারনের দলভুক্ত হয়ে অাছো। কেননা কোন কিছু জানার মাধ্যমে অনেক ধারনা বা তথ্য পাওয়া যায় কিন্তু সফল হওয়া যায় না,সার্থক হওয়া যায় না।

এখন অামাদের সাধারণের মাঝে এমন ধারনা বিরাজ করছো যে, “অনেক কিছু জানে এমন ব্যাক্তিই জ্ঞানি”। যা মোটেও গ্রহনযোগ্যতা পায় না। অজানা বিষয়ে জানার মাধ্যে কতটুকুই বা সার্থকতা পাওয়া যায়, যদি না বাস্তবে তা কাজে না লাগায়??

বইতে লেখা অাছে ভাত রান্নার পদ্ধতি, একটি পাতিলে একট লিটার পানি, অাধা লিটার চাল, ১ ঘন্টা ধরে রান্নার চুলায় রেখে দিলেই ভাত রান্না হয়ে যায়,কিন্তু বাস্তবে যখন রান্না করতে যাবে তখন দেখবে রান্নার চুলায় অাগুন না দিলে কখনও রান্না হবে না। বই তোমাকে বাস্তবতার একক নির্দেশনা দেবে, অার বাস্তবতায় হাতে কলমে শিখতে গেলে দেখবে এর মধ্যে কত রকমের খুটি নাটি বিষয় অাছে। তাই তোমার জানা বিষয়, জ্ঞান তোমার মাথায় বোঝাই করে কি লাভ, বাস্তবে একটু খোচা দিয়েই দেখ না কত অভিজ্ঞতা পাবে।

তোমাকে জীবনের প্রত্যেকটা কাজ এমন ভাবে করতে হবে যেন এর মাঝে কোন খাদ, ফাকফোকর না থাকে। একটা বিষয় খেয়াল করছে কি? নিজের জানা প্রত্যেকটি জ্ঞানকে কাজে লাগাও, খুটিয়ে খুটিয়ে প্রত্যেকটা বিষয় নিয়ে বাস্তবতায় কাজে লাগাও।

পরিক্ষার অাগের সময়ে তুমি যেভাবে সিরিয়াসলি পড়ো ঠিক সেইভাবে একই উন্মাদনায় সারা বছর পড়তে তাহলে পড়াশুনা তোমার জন্য কতো সহজ হতো, ভালো রেজাল্ট করা তখন কঠিন বলে মনে হতো কি?

এগুলো সবই তোমার মধ্যে হেয়ালিপনার কারনকে দোষারোপ করা যায়। একটা কথা মনে রাখো, “জীবন একটাই তাই নিজের মধ্যে যতটুকু সামর্থ্য অাছে তা নিয়ে লড়াই করো”। প্রতিটা কাজ করার অাগে সাহস, অান্তবিশ্বাস, ইচ্ছা ও কৌশলতাই সফলতার উপকরন,এখন তো জেনেই গেছো এবার এগুলো তুলে অানো নিজের মধ্যে।

যতই সময়ের সাথে সামনে এগুবে ততই নতুন নতুন অবস্থা, ঘটনাচক্রের সামনে মুখোমুখি হতে হবে, তাই সহজেই বিষয়টা তোমার মস্তিষ্কে সহজভাবে ঢোকে না তাই অামরা অনেকেই বলে” ভাই এটা বুঝিই না কেমনে হয়” কিন্তু এটা এতোই সহজ যে তোমার মস্তিষ্ক ঠিক সেই ভাবে গ্রহন করা হয়নি বিষয়টির গঠন বা কাঠামো যেভাবে তৈরী করা হয়েছে। এটা একটা মজাদার বিষয় যে অামরা কোন বিষয়ে প্রাথমিক ভাবে না বোঝা গেলে মস্তিষ্ক অামাদের অর্ডার করে যে অামি এটা বুঝতে পারবো না। এই বুঝতে না পারার ভয়েই অামাদের অান্তবিশ্বাস হারাই। তাই সামনের বিষয়টি যদি অারো সহজও হয় তাও অামরা এটা সহজ ভাবে বুঝতে পারিনা কারন অামরা শুরুতেই ধরেই নিয়েছি অামি এটা হয়ত পারবো না। কিন্তু এটা অবশ্যই মানা উচিত অামাদের মস্তিষ্ক খুবই অারাম বা শান্ত প্রিয় তাই একটু জটিল বিষয় অামাদের মস্তিষ্কের উত্তেজিতে হলেই অামাদের কাছে অনেক কঠিন বা কষ্ট মনে হয় কিন্তু কষ্টা ছাড়া কি কোন কিছু হয়।

একটা প্রবাদ অাছে না, ” জীবন ফুল শয্যা নয়” কেন বলা হয়, কারন তোমার জীবন বাসরের অাগাম প্রস্তুতি নিয়ে তৈরী করা হয়নি। তৈরী করা হয়নি কোন ভোগ,বিলাসতার জন্য। লড়াই, অনুপযুক্ত জটিলতায় ভরা থাকে প্রত্যেকের সময়টা। তাই সামনে এগিয়ে যাবার জন্য বাস্তবতায় বিশ্বাস করো। পৃথিবীর প্রতিটি মানুষ প্রথম বা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ কে এতোটা ভয় পায় না যতটা ভয় পায় কোন কাজ করার অাগের নিজের অান্তবিশ্বাসের অভাবে কাজের ভবিষ্যৎতের জন্য। অামি কি পারবো,সঠিক ভাবে পারবো কি,অামার দ্বারা হবে কি এটা কেন বলো এটা তুমি। যারা সফল তারা কি খায়? তারা কি দেখে? তাদের কি রক্ত মাংশ কি নেই নাকি তোমার মত?? এগুলোর কি কোন ব্যাতিক্রম উত্তর দিতে পারবে??

পৃথিবীতে সফলদের তারকা বলা হয় কেন যানো যারা নিজে জ্বলে অন্যদের অালোকিত করে,অন্যদের অনুপ্রানিত করে, অন্যদের উৎসাহিত করে। উদাহরণটা বিল গেইটস, মার্ক জাকারবার্গ,ডঃ ইউনুস, এপিজে অাবুল কালাম অাজাদের জীবনের ফিরিস্তি দেখলে বোঝায় কোন অবকাশ থাকে না। কিন্তু তুমি যদি সফলদের তারকা কেন বলা হয় তা যদি নাইবা জানো তাহলে না তুমি সফলতার অালোর গোপন কথা কীভাবে জানবে? না হবে অনুপ্রাণিত না হবে উৎসাহিত তাই শেখার ও কোন জুড়ি নেই।

তাই অার বসে থেকো না নিজেকে অাবিস্কার করো, নিজেকে চেনো,নিজেকে জানো কে এই তুমি? কেন অাসছো এই পৃথিবীর বুকে? কী করা উচিত?

এর উত্তর গুলোই তোমার সফলতার সমীকরণ যোগাতে সাহায্য করবে। তুমি জীবনে যা, যাই হতে চাও না কেন তার পেছনে , ক্ষুধার্থ বাঘ যেভাবে শিকারের পেছনে দৌড়ায় ঠিক তেমনি তোমার লক্ষ্যের পেছনে দৌড়াতে থাকো।

ইনশাআল্লাহ সফলতা শুধুই তোমারই